টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরশহরের পুন্ডুরা সেওড়াতলা এলাকায় এক দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এক মা তার চার মাসের শিশুকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে নূপুর, নাকের নথ, মোবাইল ফোন ও জুতা কিনতে। পুলিশের অভিযানে শিশুটি উদ্ধার পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বামী থানা-পুলিশকে এ ঘটনা জানান। পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
শিশুটির নাম তামিম। তার মা লাবনী আক্তার লিজা বলেছেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি মনির নামের একজনের সহযোগিতায় ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছি। ওই টাকা দিয়ে মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।”
শিশুটির পরিবারের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে জানা যায়, তার মা লাবনী আক্তার লিজা এবং স্বামী রবিউল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য ছিল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই রবিউলের অসচ্ছলতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রবিউল সংসারে শান্তির প্রয়োজনে বাড়ির পাশেই ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত চার মাস আগে তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় কোলের সন্তান ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন স্ত্রী।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, “এটি সমাজের একটি ভয়াবহ চিত্র। নানা কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। পরকীয়া লিপ্ত থাকলে মায়েদের সন্তানদের প্রতি কোন মায়া-মমতা থাকে না। যারা এমন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত, তাদের মধ্যে অনেকেই মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে।”
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর বলেন, “লাবনী নামের এক মা তার চার মাসের ছেলেকে বিক্রি করেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। ওসি রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে মধুপুর থানা পুলিশের একটি টিম এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় শুক্রবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”