ঢাকা

হর্ন বাজালেই শাস্তি

ফুলবাড়ীয়া টুডে ডেস্ক

প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ০৩, ২০২৪

সংগৃহীত ছবি

রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশকে হর্নমুক্ত করতে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রথমে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, এরপর পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণে বিধিতেও পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের শুরুতে পুরো ঢাকা শহরকে নীরব এলাকা করতে কর্মসূচি নেয়া হবে। প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, পরে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।

প্রথমে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, এরপর পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে

তিনি আরো বলেন, হর্ন বাজানোর দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করতে প্রথমে মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন। এরপর আইনের প্রয়োগ। হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসেম্বর থেকে শাস্তি স্বরূপ জরিমানা কার্যকর করা হবে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার করলে আরো বেশি টাকা জরিমানা করা হবে। 

সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, যানবাহনে অহেতুক হর্ন, যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চ শব্দ সৃষ্টি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন ও বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে।

হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসেম্বর থেকে শাস্তি স্বরূপ জরিমানা কার্যকর করা হবে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার করলে আরো বেশি টাকা জরিমানা করা হবে। 

উপদেষ্টা আরো বলেন, হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করতে সবচেয়ে জরুরি হলো সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আমরা যদি নিজেকে সচেতন করি, প্রত্যেক চালক তার এই পুরনো অভ্যাস বন্ধে প্রতিজ্ঞা করে তাহলে দ্রুত হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করা যাবে। সেজন্য জরিমানা করার আগে আগামী কয়েকদিন ব্যাপক আকারে সচেতনতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হবে। লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

তিনি বলেন, ঢাকায় যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্নায়ুরোগ সৃষ্টি করতে পারে। জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পকে আরো কার্যকরী ভূমিকা রাখতে নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। ঢাকা শহরে হর্ন ছাড়াও মাইকিং, বিজ্ঞাপন, কন্সট্রাকশনসহ বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে। সব শব্দ বা সাউন্ড বন্ধ করা করতে হবে। নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে আমাদের ‘কম শব্দযুক্ত’ দেশে থাকতে হবে।

যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। অনেক ড্রাইভার হর্ন বাজিয়ে পাশের মানুষকে বিরক্ত করেন। ট্রাফিক সিগনাল রেড লাইট থেকে গ্রিন লাইটে এলেই সব গাড়ি হর্ন বাজানো শুরু করেন। হর্ন ছাড়াও মাইকিং, বিজ্ঞাপন, কন্সট্রাকশনসহ বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে। সব শব্দ বা সাউন্ড বন্ধ করা করতে হবে। জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে আমাদের ‘কম শব্দযুক্ত’ দেশে থাকতে হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, অনেক ড্রাইভার হর্ন বাজিয়ে পাশের মানুষকে বিরক্ত করেন। ট্রাফিক সিগনাল রেড লাইট থেকে গ্রিন লাইটে এলেই সব গাড়ি হর্ন বাজানো শুরু করেন। এটা উচিত নয়। হর্ন বাজানোর আগে ভাবতে হবে, এটি জরুরি কি না। আমরা যদি বাস, ট্রাক বা গাড়িতে অপ্রয়োজনীয় হর্ন না বাজাই তাহলে অনেক মানুষের স্বাস্থ্যহানি রোধ করা সম্ভব।

এদিকে ১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। ঐ এলাকায় হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং হর্ন বাজালে কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে। এ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

সূত্র: ইউএনবি